চিকিৎসকের সহকারী হিসেবে কাজ করেই হয়ে গেছেন চিকিৎসক। প্রাতিষ্ঠানিক কোন ডিগ্রী নেই। চেম্বার সাজিয়ে নিজেই শুরু করেন অবৈধ ব্যবসা। রোগী দেখতে নিয়ে থাকেন চড়া ফি। বিভিন্ন রোগের জটিল অপারেশন ও করছেন তিনি।
বলছি,কক্সবাজার শহরের ভুয়া চিকিৎসক নুর নাহার চৌধুরীর কথা।
অনুসন্ধ্যানে জানা যায়,শহরের বাজারঘাটা এলাকায় অবৈধভাবে রমরমা ব্যবসা শুরু করেছে এ ভুয়া চিকিৎসক। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে আসা রোগীদের ফাঁদে ফেলে দালাল চক্র নিয়ে আসে নুর নাহারের চেম্বারে। এরপর চিকিৎসার নামে হাতিয়ে নেয়া হয় লাখ লাখ টাকা। নুর নাহারের রয়েছে ৮ জনের একটি দালাল সিন্ডিকেট। যারা কক্সবাজার সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে রোগীদের ফাঁদে ফেলে এসব দালালরা। যে ফাঁদে পা দিয়ে সেই মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা ‘হাজী ওলা মিয়া ভবন নামে একটি ভবনে চেম্বার করেছেন ভুয়া চিকিৎসক নুর নাহার। সেখানে রয়েছে একটি বেড। যেখানে রোগীর চিকিৎসা করা সরু একটি কক্ষে। প্রথমে সেখানে সাংবাদিক প্রবেশে বাঁধা দিলেও পরে সমঝোতার চেষ্টা করেন নুর নাহার। তিনি নিজেকে চিকিৎসক দাবি করলেও চিকিৎসক হিসেবে তার কোন সঠিক নতি দেখা পারেননি। নাম সর্বোচ্চ একটি ট্রেনিং নিয়েছে চিকিৎসার উপর। তার একটি সার্টিফিকেট রয়েছে তার কাছে। এটির ভিত্তিতেই তিনি নিজেকে চিকৎসক পরিচয় দিচ্ছেন।
এদিকে, গত ৯ মার্চ টিউমার যন্ত্রণা নিয়ে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে আসেন ঈদগাঁওয়ের নতুন অফিস এলাকার সেলিম উদ্দিনের স্ত্রী মিনু আরা বেগম (২৮)। অপারেশনের কথা বলে দালালরা ফাঁদে ফেলে ভুয়া চিকিৎসক নুর নাহার চৌধুরীর কাছে। সে অপারেশনের নামে পেট কেটে নাম সর্বোচ্চ চিকিৎসা করে। তারপর মিনু আরাকে বলে ১৫ দিন পর্যন্ত কোন ডাক্তারের কাছে না যেতে। ১৫ দিন পর পরীক্ষা করাতে বলেন। কিন্তু ১৫ দিন পরে এসে পরীক্ষা করা হলে তার টিউমার পেটের মধ্যে রয়ে গেছে বলে জানতে পারে মিনু আরা। এখন যন্ত্রণায় চটপট করছেন এ হতভাগা নারী।
অসুস্থ মিনু আরা অভিযোগ করে বলেন, আমাকে ফাঁদে ফেলে তারা নিয়ে অপারেশন নাম করে টাকা নিয়েছে। কোন অপারেশন করেনি। আমি যখন তার কাছে এটা বলতে যায় তখন তিনি আমাকে তার চেম্বার থেকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়।
মিনু আরার স্বামী সেলিম উদ্দিন বলেন, এখন আর কি করবো। পুলিশের কাছে অভিযোগ দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। আল্লাহ যদি সহায় হয়। অপারেশনের নামে আমাদের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা নেয়।
নিজের দোষ স্বীকার করে ভুয়া চিকিৎসক নুর নাহার চৌধুরী বলেন, আমার নাম কামরুন নাহার চৌধুরী। চিকিৎসা পত্রে ভুল নাম ব্যবহার করেছি। আমার যা করতে পারেন করেন গা। আমার কোন সমস্যা নেই।
তিনি আরও বলেন, আমি নিয়মিত চিকিৎসা দেয় মানুষকে। কিন্তু কেউ আমাকে অভিযোগ করেনি। অতিরিক্ত ফি নেয়ার বিষয়টিও অস্বীকার করেন তিনি।
এদিকে, মিনু আরার বর্তমান চিকিৎসকরা বলছেন, টিউমারের স্থানে উল্টো এখন সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। দ্রæত যদি এখন উন্নত চিকিৎসা করা না হয়। তাহলে বিপদ হতে পারে তার।
Copyright @ 2021
Development by: webnewsdesign.com