জটিল ও অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়ে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দিন কাটাচ্ছে মাহমুদুল করিম (১৯) নামের পেকুয়ার দিনমজুর এক যুবক। এতিম ও অসহায় এ যুবক বেকার হয়ে পড়ায় সংসারেও এখন অন্ধকার নেমে এসেছে রোগটির কারণে। এতে চিকিৎসার অভাবে হতদরিদ্র এ যুবক গুনছে মৃত্যুর প্রহরও।
নিজের যৎসামান্য সহায়-সম্বল নিয়ে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা করলেও কোন তার রোগটি শনাক্ত করতে পারেননি। এখন চিকিৎসা বিহীন অবস্থায় কাটছে তার যন্ত্রণাময় জীবন।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, যুবকটির শরীরে জটিল ও অজ্ঞাত রক্তচোষা এক রোগ বাসা বেঁধেছে। তাকে প্রতি সপ্তাহে রক্ত গ্রহণ করতে হয়। দ্রুত চিকিৎসা না পেলে তার মৃত্যু অনির্বায্য।
জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা মাহমুদুল করিমরা ৪ ভাই ও ৩ বোন। ভাই বোনদের মধ্যে মাহমুদল তৃতীয় সন্তান। গত ৫ বছর আগে তাদের বাবা মারা যান। এরপর বড় ২ ভাই তাদের স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে আলাদা হয়ে যায়। মাহমুদল করিম ছোট ২ ভাই ও ৩ বোনকে নিয়ে মায়ের সঙ্গে থাকেন।
মা-সহ ৬ জনের সংসারে মাহমুদুলই ছিল একমাত্র উপার্জনক্ষম। কিন্তু গত ৬ মাস আগে জটিল ও অজ্ঞাত রোগটিতে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে পরিবারটিতেও নেমে এসেছে অন্ধকার। এখন চিকিৎসা বিহীন অবস্থায় জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে তীব্র যন্ত্রণাময় দিননিপাত করছে এতিম মাহমুদুল করিম।
মাহমুদুল করিমের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ৬ মাস আগে তার শরীরে কোমরের নিচে ডান পায়ে কয়েকটি ছোট ফোস্কার মত গুটির দেখা মিলে। এগুলোতে চুলকানি দেখা দিলে পেকুয়ার স্থানীয় এক হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নেয়। কিন্তু এতে ফোস্কার মত গুটিগুলো আরো বড় হতে থাকে এবং বিস্তৃতি ঘটে। এক পর্যায়ে এগুলো অবিচ্ছিন্ন আকারে পায়ের উরুর আরো অর্ধেকাংশ পর্যন্ত বিস্তৃতি ঘটে।
জটিল ও অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত অসহায় এ যুবক বলেন, “ ফোস্কার মত অবিচ্ছিন্ন এ গুটিগুলো এখন কোমরের নিচ থেকে হাটু পর্যন্ত বিস্তৃতি ঘটেছে। তীব্র ব্যাথা ও যন্ত্রণা লেগেই আছে সর্বক্ষণ। মাঝে মধ্যে প্রচন্ড যন্ত্রণার কারণে প্রাণ যায় মত অবস্থা হয়। ফোস্কার মত গুটিগুলো রক্ত চুষে নেয়ায় এখন প্রতি সপ্তাহে রক্তগ্রহণ করতে হয়। ”
মাহমুদুল বলেন, রোগটি ধরা না পড়ার আগে তিনি দিনমজুরী করে মা ও ৫ ভাইবোনের সংসার চালাতেন। এখন রোগে আক্রান্ত হয়ে বেকার হয়েছে পড়েছে। যেটুকু সহায় সম্পদ ছিল তা দিয়ে চিকিৎসা করাতেই শেষ হয়েছে। খুবই কষ্টে অনাহারে অর্ধাহারে কাটছে তাদের সংসার। এখন চিকিৎসা বিহীন অবস্থায় সংসারের ঘানি টানতে তিনি দু’চোখে অন্ধকার দেখছে।
তার ভাষ্য, রোগটি দেখা দেয়ার পর কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে কয়েকজন চিকিৎসকের কাছে শরণাপন্ন হয়েছিল। কোন চিকিৎসকই রোগটি কি ধরণের তা শনাক্ত পারেননি। চট্টগ্রামের এক চিকিৎসক কিয়ৎ অংশ অপারেশন করলে সেটি আরো বিস্তৃতি ঘটে। এতে ওই চিকিৎসক তার চিকিৎসক বন্ধ করে দেন। ওই চিকিৎসক তাকে ভারতে গিয়ে চিকিৎসার পরামর্শ দিয়েছেন।
এদিকে যতই দিন যাচ্ছে ততই ফোস্কার মত অবিচ্ছিন্ন গুটিগুলোর আরো বিস্তৃতি ঘটছে। তীব্র ব্যাথা ও যন্ত্রণাময় ফোস্কাগুলোর কারণে শরীরে দেখা দিয়ে রক্ত শূন্যতা। এতে প্রতি সপ্তাহান্তর তাকে রক্তগ্রহণ করতে হচ্ছে।
এরপর চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি হলে সেখানকার চিকিৎসকরাও রোগটি শনাক্ত করতে পারেননি বলে জানান মাহমুদুল করিম।
চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে হতদরিদ্র এ যুবক বলেন, ভারতে গিয়ে চিকিৎসা করতেও মোটা অংকের টাকার প্রয়োজন পড়বে। এখন সামান্য ভিটে মাটি ছাড়া তার পরিবারের আর কোন সহায় সম্পদ নেই চিকিৎসা করার মত। কিন্তু দিন দিন চিকিৎসার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় তার পক্ষে তাও সম্ভব হচ্ছে না। এমতাবস্থায় তার পরিবারে দেখা অভাব অনটন। এতে তাদের সংসার চলছে অনাহারে অর্ধাহারে।
যদি দ্রুত চিকিৎসা করা সম্ভব না হয় তার মৃত্যু অনির্বায্য বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
এমতাবস্থায় প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলসহ সমাজের মহৎপ্রাণ এবং বিত্তবান ব্যক্তিদের সাহায্যের হাত বাড়ানোর জন্য আকুল মিনতি জানিয়েছে এতিম ও হতদরিদ্র অসহায় যুবক মাহমুদুল করিম।
মাহমুদুলের কাছে সরাসরি সহায়তা প্রদানে খোলা হয়েছে তার ব্যক্তি একটি বিকাশ একাউন্ট নম্বর (পার্সোনাল-০১৮৮৪-৮৭০৭৮২ ) অথবা সরাসরি ০১৮৭০৫৬৮৪২৭ নম্বর মুঠোফোনে তার সঙ্গে কথা বলে সাহায্য পাঠাতে পারবেন।
Copyright @ 2021
Development by: webnewsdesign.com