ক্রমান্বয়ে বাড়ছে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। আক্রান্ত হয়ে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ২০ জন। যাদের পরীক্ষার পর শনাক্ত করা হয়েছে।
হাসপাতাল সুত্রে জানা যায়, সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য খোলা হয়েছে বিশেষ সেল। যে সেল ডেঙ্গু রোগীদের সেবা পেতে সাহায্য করবে। ভর্তি থাকা ২০ রোগী ছাড়াও একজনকে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়া চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
এর আগে, চট্টগ্রাম নেয়ার পথে উখিং নু রাখাইন নামে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। এসব রোগীর মধ্যে ১৩ জন ঢাকা থেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে। বাকি ৭ জনের মধ্যে উখিয়ায় ১ জন, রামুতে ২ জন, টেকনাফে ১ জন সহ বাকিরা বিভিন্ন এলাকায় আক্রান্ত হয়ে সদর হাসপতালে ভর্তি হয়েছে জানা গেছে।
এদিকে ডেঙ্গুর বিস্তার ঠেকাতে ফুলের টব, পরিবেশের চারপাশে জমে থাকা ময়লা আর্বজনা, যে সব স্থানে মশা জন্মায় সে সব জায়গা, বাড়ির আশপাশ পরিস্কার এবং দিনে রাতে ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহারের উপর গুরুত্বারোপ করেন চিকিৎসকরা।
স্থানীয়রা বলছে, কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন এলাকায় এখনো ধীরগতিতে সরানো হয় ময়লার স্তুপ। সেখানে থেকে প্রতিনিয়ত বাড়ছে মশার উৎপাত। দ্রুত এবিষয়টির উপর নজর দেয়ার তাগিদ দেন তারা।
শহরের ৬নং এলাকার স্কুল শিক্ষক রবিউল ইসলাম রবি বলেন, দুইটি মোড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকে ময়লা-আবর্জনার স্তুপ। যা রোদ উঠলেই দুর্গন্ধ ছড়ায়। পৌর কাউন্সিলরকে একাধিকবার বলার পরও তার সমাধন হয়নি। এখন ডেঙ্গু আতঙ্ক কাজ করছে। এখন হলেও তা পরিস্কারের দাবি জানাচ্ছি।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা: মাহবুবুর রহমান বলেন, যে ২০ জন ভর্তি রয়েছে তাদের বেশীর ভাগই বাহিরে থেকে আক্রান্ত হয়েছে। কক্সবাজারে আক্রান্তের সংখ্যা খুবই কম। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের ডেঙ্গু সেলের প্রধান ডা: মো. শামসুদ্দীন দৈনন্দিনকে বলেন, ক্রমান্বয়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী বৃদ্ধি পাওয়ার আশংকা রয়েছে। সবচেয়ে আশংকাজনক এবং দূর্ভাগ্য যে কক্সবাজারে ডেঙ্গু রোগী সনাক্তকরণের জন্য পরীক্ষার ব্যবস্থা কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেই। ফলে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সদর হাসপাতালে ভর্তি রোগীর কিভাবে ডেঙ্গু সনাক্ত করা হবে তা জানাতে পারেননি তিনি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ডেঙ্গু শনাক্তকরণে কক্সবাজারবাসীকে ছুটতে হচ্ছে প্রাইভেট হাসপাতাল গুলোতে। ডেঙ্গু রোগীর হার উর্ধমূখি, দিন দিন বাড়তে পারে। কক্সবাজারের মানুষ সচেতন না হলে বিপদ হতে পারে। কেননা পৌরসভার নালা নর্দমাতে পরিচ্ছন্নতা অভিযান জরুরি ভিত্তিতে আরও আগে পরিস্কার করা উচিত ছিল বলে মনে করেন কক্সবাজারের সচেতন মহল।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা: মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, সদর হাসপাতালে এ পর্যন্ত ২০ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছে। ২০ জনের অবস্থা ভালো তবে একজন রোগীর ফুসফুসে পানি জমে যাওয়ায় একটু অবনতির দিকে রয়েছে।
ডেঙ্গু সনাক্তকরনের জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপাতত আমরা বাহির থেকে করিয়ে নিচ্ছি।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ও ডেঙ্গু সেলের সদস্য সচিব নোবেল কুমার বড়ুয়া জানান, ঢাকা থেকে আসা ডেঙ্গু জীবানু বহনকারিদের কারনে কক্সবাজারে ছড়িয়ে পড়ার আশংকা রয়েছে ডেঙ্গু রোগ।
কক্সবাজারের অনেকে লেখাপড়া ও কর্মক্ষেত্রের তাগিদে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় বসবাস করেন। ডেঙ্গু রোগ হওয়ায় তাদের অনেকে কক্সবাজারে চলে আসেন। ফলে তাদের সাথে সেই ডেঙ্গু জীবানু চলে আসে। এক পর্যটক ডেঙ্গু রোগ নিয়ে
কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় নতুন করে শংকা সৃষ্টি হয়েছে। গত ২৮ জুলাই থেকে ডেঙ্গু মনিটিরিং টিম গঠন করে সকলে সার্বক্ষনিক দ্বায়িত্ব পালন করছে।
Copyright @ 2021
Development by: webnewsdesign.com