কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁওতে একদিকে বৈশাখের প্রচন্ড খরতাপ, অন্যদিকে বিদ্যুৎ নিয়মিত আসা-যাওয়ার লুকোচুরিতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে স্থানীয় জনজীবন। সরকারের হিসাব মতে দেশে কোন বিদ্যুতের ঘাটতি না থাকলেও বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের অব্যাহত যন্ত্রনায় অতিষ্ট হয়ে উঠেছে বৃহত্তর ঈদগাঁওবাসীর জনজীবন। সকাল হতে না হতেই সূর্যের তাপ মাত্রা বৃদ্ধি সঙ্গে সঙ্গে সময়-অসময়ে দেখা দিচ্ছে কথিত বিদ্যুৎ সঞ্চালনের লাইনে ক্রুটি। বিতরন ও সঞ্চালন ব্যবস্থার ক্রুটির কারনে সাধারন মানুষকে দুঃসহ গরমে দিন-রাতই পোহাতে হচ্ছে লোডশেডিংয়ের তীব্র যন্ত্রনা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সদর উপজেলার বৃহত্তর ঈদগাঁওবাসীর জনজীবন। প্রতিদিনই পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-ঈদগাঁও বিলিং এরিয়ার সাব জোনাল অফিসের কলেজ গেইট সাবষ্টেশন থেকে ঘন ঘন লোডশেডিং দিয়ে বৃহত্তর ঈদগাঁওর জনজীবন অতিষ্ট করে তুলেছে।
ঈদগাঁও ইউনিয়নে বিভিন্ন এলাকায় কয়েকদিন ধরে সকাল ৫টার পর বিদ্যুৎ চলে গিয়ে পূনরায় বিদ্যুৎ আসে বিকাল ৫টার সময়, দৈনিক গড়ে ৩ ঘন্টাও বিদ্যুৎ পাচ্ছে না। এর আসা-যাওয়াতে দিন-রাত সাধারণ মানুষের তীব্র যন্ত্রনা পোহাতে হচ্ছে। এলাকায় রমজান মাসেও চলছে বিদ্যুতের নিয়মিত আসা-যাওয়ার খেলা।রোজার মাসে ঘন বসতি পূর্ন এলাকা সদরের বৃহত্তর ঈদগাঁওর জনজীবন অতিষ্ট হয়ে পড়েছে গত কয়েক দিন ধরে। এ ছাড়াও সদরের ঈদগাঁও, ইসলামাবাদ, জালালাবাদ, পোকখালী, ইসলামপুর চৌফলদন্ডী, ভারুয়াখালী ইউনিয়নে কয়েক দিন ধরে সকাল থেকে ঘন ঘন লোডশেডিং এর একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। একদিকে যখন বিদ্যুৎ থাকে না এমন সময় বিদ্যুৎ বিভাগের অফিসিয়াল নাম্বারে ফোন করেও ফোন ব্যাস্ত পাওয়া যায়। আবার ফোন রিসিভ করলেও গ্রাহকদের সাথে দুর্ব্যবহার করা হয় বলে এমন অভিযোগও রয়েছে গ্রাহকদের। গত কয়েকদিনের প্রচন্ড তাপদাহ যত তীব্র হচ্ছে,বিদ্যুতের লোডশেডিং যেন ততই পাল্লাদিয়ে বাড়তে থাকে। দিনে-রাতে কয়েক ঘন্টাব্যাপী লোডশেডিং দিয়ে যাত্রা শুরু হয়। সন্ধ্যার পরে দ্বিতীয় ধাপে আর রাতে চলে আসা-যাওয়ার পালাক্রম যা শেষ রাত পর্যন্ত চলে। তাছাড়া রমজান মাসে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের বিদ্যুৎ সংকটের ফলে বিপর্যয়ের মুখে রয়েছে সদরের স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা ছাড়াও প্রায় ছোট-বড় শতাধিক শিল্প কারখানা,বিদ্যুৎ নির্ভরশীল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান,অফিসিয়াল কার্যক্রম,হাসপাতাল ও বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসাসেবা চরম ভাবে বিঘিন্নিত হচ্ছে।
ঈদগাঁও বাজার সফি সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য জালালাবাদ যুবলীগ সভাপতি মোঃ হাসান তারেক ও এক দোকান মালিক জানান, কারনে-অকারনে বিদ্যুতের লোডশেডিং দেখা দিচ্ছে এব্যাপারে অফিসে যোগাযোগ করা হলে আমদের সাথে ভাল আচরন করা হয়না বরং কথা না বলে সাথে সাথে মোবাইল ফোনের লাইন কেটে দেন। এবার রমজানের শুরুতে বৈশাখের ভয়াবহ খরতাপ অন্যদিকে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারনে বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করায় ক্রেতারা মার্কেটমুখী হচ্ছে না। আমরা বসে বসে দিন পার করছি। বাজারের মোবাইল মার্কেটের এক মেকার জানান, বর্তমানে ডিজিটাল যুগ, প্রায় সকল কিছুই নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে মোবাইল ফোন এবং কম্পিউটারের মাধ্যমে কিন্তু ঘন ঘন বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারনে আমাদেরকে বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। খরিদ্দারের সাথে দেয়া কথামত সঠিক ভাবে মালামাল ডেলিভারি দিতে পারছি না।
ভোক্তভোগি মোঃ আবু নাঈম জানান, এক ঘন্টা পর পর বিদ্যুৎ চলে যায়। আবার অনেক সময় বিদ্যুৎ থাকলেও ভোল্টেজ ওঠানামা করায় ঘরের লাইট, টিভি, ফ্রিজ, পানির মটর, এবং গুরুত্বপূর্ণ ইলেকট্রনিকস ও বিভিন্ন প্রকার খাদ্য সামগ্রী নষ্টসহ দৈনন্দিন কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। বিদ্যুৎ আসা-যাওয়ার ফাঁদে পড়ে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার বিঘ্ন সৃষ্টি করছে। তবে ঈদগাঁওতে ঘন ঘন লোডশেডিং হওয়ার পেছনে বরাদ্ধ নির্দিষ্ট মেগাওয়াটের বিপরীতে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া এবং লোডশিডিং দিয়ে বড় বড় কারখানায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় বলে মনে করছেন স্থানীয় সচেতন মহলসহ ভোক্তভোগিরা।
পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি- ঈদগাঁও বিলিং এরিয়া সাব জোনাল অফিসের এক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,বিভিন্ন এলাকায় লাইন মেরামতের কাজ করা হলে তখন ওই এলাকার বিদ্যুৎ লাইন সাময়িকের জন্য বন্ধ রাখা হয়। এটাকে লোডশেডিং বলা যায় না। ঈদগাঁও বিলিং এরিয়ার সাব জোনাল অফিসের এজিএম শহিদুল হকের সাথে মোবাইলে বেশ কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
Copyright @ 2021
Development by: webnewsdesign.com